চাঁদের খনিজ পদার্থ আহরণ করার জন্য এখন সেখানে কিভাবে একটি স্টেশন
তৈরি করা যায় তা নিয়ে ভাবছেন গবেষকরা। আর সেই স্টেশন তৈরির জন্য চাই
উপযুক্ত রোবট, যারা চাঁদের চরম তাপমাত্রার মধ্যে কাজ করতে পারবে। পৃথিবীর
একমাত্র উপগ্রহটি কেবল রূপকথার চাঁদমামা হিসেবেই থাকতে রাজি নয়।
বিজ্ঞানীদের ধারণা, এ উপগ্রহে রয়েছে অনেক ধরনের দুষ্প্রাপ্য খনিজ পদার্থ।
চাঁদে রয়েছে লোহা, স্বর্ণ, টাইটান, প্লাটিনাম ও ইরিডিয়ামের খনি। আরও রয়েছে
হিলিয়াম থ্রি গ্যাস, যা পাওয়া যায় কেবল সূর্যের আলোতে। এটি হচ্ছে আলোর একটি
কণা, যা বিদ্যুৎ উৎপাদনে সহায়তা করে। পৃথিবীর চৌম্বক ক্ষেত্রের সৌর
বায়ুর কারণে এ হিলিয়াম থ্রি পৃথিবীর বুকে জমা হতে পারে না। কিন্তু চাঁদে তো
কোনো বাতাস নেই, তাই এই হিলিয়াম থ্রি বাধা পায় না। বিজ্ঞানীদের ধারণা,
বিলিয়ন বিলিয়ন বছর ধরে এ হিলিয়াম থ্রি চাঁদের বুকে জমা হয়েছে, যার নাম তারা
দিয়েছেন রিগোলিথ। বিজ্ঞানীদের আরও ধারণা, এ হিলিয়াম থ্রি পৃথিবীর কয়েকশ’
বছরের বিদ্যুৎ চাহিদা মেটাতে পারবে।
তবে এসবই এখন পর্যন্ত কল্পকাহিনী। পার্থক্য কেবল এই যে, এগুলো রূপকথার বইতে নয়, মহাকাশ বিজ্ঞানীদের গবেষণাপত্রে লেখা। তবে সেই কল্পকাহিনীর সত্যতা যাচাই করে দেখার জন্য চেষ্টার শেষ নেই। এ লক্ষ্যে কাজ করছে জার্মানির মহাকাশ কেন্দ্র বা ডিএলআর। এ কাজে তাদের সহায়তা করছে মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা। নাসার কাছ থেকে পাওয়া ছবি কাজে লাগিয়ে এখানকার বিজ্ঞানীরা চাঁদের পুরো পৃষ্ঠভাগের একটি ডাটাসেট তৈরি করেছেন। এর মাধ্যমে চাঁদের কোন জায়গাটি স্টেশন তৈরির উপযুক্ত সেটি তারা খুঁজে বের করার চেষ্টা করছেন। তবে চাঁদের পরিবেশে জ্বালানি সরবরাহের বিষয়টি একটি বড় বাধা বলে জানিয়েছেন গবেষক রাল্ফ ইয়াউমান। তার বক্তব্য, ‘চাঁদে জ্বালানির প্রশ্নটি অত্যন্ত মৌলিক বিষয়, যা আমরা পৃথিবী থেকেই দেখতে পাই। সেখানে ১৪ দিন সূর্যের আলো থাকে, ১৪ দিন থাকে পুরো অন্ধকার। সেখানে যা-ই করা হোক না কেন টানা ১৪ দিন সূর্যের আলো ছাড়াই কাজ চালাতে হবে। চাঁদে তাপমাত্রা অত্যন্ত চরম। কোনো পাহাড়ের পাশে ছায়ার মধ্যে গেলেই তাপমাত্রা ১০০ ডিগ্রি থেকে নেমে গিয়ে মাইনাস ১০০ ডিগ্রিতে গিয়ে দাঁড়ায়। সুতরাং রোবটকে সেটি সহ্য করতে হবে।’
চাঁদের এই চরম তাপমাত্রাতে কোনো মানুষের পক্ষে কাজ করা সম্ভব নয়। তাই রোবটই ভরসা। কিন্তু সেই রোবটকেও হতে হবে অন্যান্য রোবটের চেয়ে পুরো আলাদা, যার থাকবে নিজস্ব বুদ্ধিমত্তা ও সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা। তেমন রোবট তৈরির কাজ করছেন ‘জার্মান রিসার্চ সেন্টার ফর আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স’ বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা গবেষণা কেন্দ্র। এখানকার বিজ্ঞানী ফ্রাংক কিশনার ও তার সহযোগীরা ছয় পাওয়ালা একটি রোবটের মডেল তৈরি করেছেন। চাঁদের তাপমাত্রা আর রুক্ষ পৃষ্ঠভাগে দ্রুত চলাচল করতে পারবে এমন রোবট তারা তৈরি করতে চান। বিজ্ঞানী কিশনার বললেন, ‘আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে ভিন্ন গ্রহে দ্রুত চলাচল করতে পারে এমন বস্তু তৈরি করা, যা একটা বড় চ্যালেঞ্জ। কারণ কোনো রোবট চাঁদ কিংবা মঙ্গলে গেলে তার প্রতিটি গতিবিধি নিয়ন্ত্রণ করতে আমরা পারব না। তাই এটির নিজস্ব বুদ্ধিমত্তা ও স্বাধীনতা থাকতে হবে।’
তবে বিজ্ঞানী কিশনার চাঁদে খনিজ পদার্থ থাকার কল্পকাহিনীর পেছনে ছুটছেন
না। তিনি এ ধরনের কাজ করতে পছন্দ করেন বলেই এই রোবট তৈরির চেষ্টা করছেন।
তিনি বলেন, ‘চাঁদের বুকে খনন চালানোটা কতটুকু কাজে দেবে তা নিয়ে সন্দেহ
আছে। কারণ চাঁদের ব্যাপারে আমরা মানব জাতি এখনো নিশ্চিত নই। তবে অন্যান্য
গ্রহে অনেক দুষ্প্রাপ্য বস্তু রয়েছে। বিশেষ করে পৃথিবীর আশপাশে ছুটে চলা
উল্কাগুলোতে। কারিগরি দিক থেকে বলতে গেলে, সেসব উল্কার বুকে পেঁৗছতে আমাদের
খুব বেশি দেরি নেই।’
বিজ্ঞানীদের মতো সাধারণ মানুষেরও আশা, হয়তো চাঁদ ও অন্যান্য গ্রহ থেকেই একদিন আমরা জ্বালানির উৎস খুঁজে পাব।
১৬ জানুয়ারি ২০১২ বাংলাদেশ প্রতিদিন
তবে এসবই এখন পর্যন্ত কল্পকাহিনী। পার্থক্য কেবল এই যে, এগুলো রূপকথার বইতে নয়, মহাকাশ বিজ্ঞানীদের গবেষণাপত্রে লেখা। তবে সেই কল্পকাহিনীর সত্যতা যাচাই করে দেখার জন্য চেষ্টার শেষ নেই। এ লক্ষ্যে কাজ করছে জার্মানির মহাকাশ কেন্দ্র বা ডিএলআর। এ কাজে তাদের সহায়তা করছে মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা। নাসার কাছ থেকে পাওয়া ছবি কাজে লাগিয়ে এখানকার বিজ্ঞানীরা চাঁদের পুরো পৃষ্ঠভাগের একটি ডাটাসেট তৈরি করেছেন। এর মাধ্যমে চাঁদের কোন জায়গাটি স্টেশন তৈরির উপযুক্ত সেটি তারা খুঁজে বের করার চেষ্টা করছেন। তবে চাঁদের পরিবেশে জ্বালানি সরবরাহের বিষয়টি একটি বড় বাধা বলে জানিয়েছেন গবেষক রাল্ফ ইয়াউমান। তার বক্তব্য, ‘চাঁদে জ্বালানির প্রশ্নটি অত্যন্ত মৌলিক বিষয়, যা আমরা পৃথিবী থেকেই দেখতে পাই। সেখানে ১৪ দিন সূর্যের আলো থাকে, ১৪ দিন থাকে পুরো অন্ধকার। সেখানে যা-ই করা হোক না কেন টানা ১৪ দিন সূর্যের আলো ছাড়াই কাজ চালাতে হবে। চাঁদে তাপমাত্রা অত্যন্ত চরম। কোনো পাহাড়ের পাশে ছায়ার মধ্যে গেলেই তাপমাত্রা ১০০ ডিগ্রি থেকে নেমে গিয়ে মাইনাস ১০০ ডিগ্রিতে গিয়ে দাঁড়ায়। সুতরাং রোবটকে সেটি সহ্য করতে হবে।’
চাঁদের এই চরম তাপমাত্রাতে কোনো মানুষের পক্ষে কাজ করা সম্ভব নয়। তাই রোবটই ভরসা। কিন্তু সেই রোবটকেও হতে হবে অন্যান্য রোবটের চেয়ে পুরো আলাদা, যার থাকবে নিজস্ব বুদ্ধিমত্তা ও সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা। তেমন রোবট তৈরির কাজ করছেন ‘জার্মান রিসার্চ সেন্টার ফর আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স’ বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা গবেষণা কেন্দ্র। এখানকার বিজ্ঞানী ফ্রাংক কিশনার ও তার সহযোগীরা ছয় পাওয়ালা একটি রোবটের মডেল তৈরি করেছেন। চাঁদের তাপমাত্রা আর রুক্ষ পৃষ্ঠভাগে দ্রুত চলাচল করতে পারবে এমন রোবট তারা তৈরি করতে চান। বিজ্ঞানী কিশনার বললেন, ‘আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে ভিন্ন গ্রহে দ্রুত চলাচল করতে পারে এমন বস্তু তৈরি করা, যা একটা বড় চ্যালেঞ্জ। কারণ কোনো রোবট চাঁদ কিংবা মঙ্গলে গেলে তার প্রতিটি গতিবিধি নিয়ন্ত্রণ করতে আমরা পারব না। তাই এটির নিজস্ব বুদ্ধিমত্তা ও স্বাধীনতা থাকতে হবে।’
বিজ্ঞানীদের মতো সাধারণ মানুষেরও আশা, হয়তো চাঁদ ও অন্যান্য গ্রহ থেকেই একদিন আমরা জ্বালানির উৎস খুঁজে পাব।
১৬ জানুয়ারি ২০১২ বাংলাদেশ প্রতিদিন