গিটার বাগান!
মার্টিন ও গ্রাসিয়েলার দাম্পত্য জীবনের সুবর্ণ সময়ে যখন তাঁরা একদিন পাম্পা খামার এলাকার ওপর দিয়ে উড়ে যাচ্ছিলেন, তখন স্ত্রী স্বামীকে বলেছিলেন, এখানে তাঁরা একটি বাগান করবেন, যার ডিজাইন হবে একটি গিটারের মতো। সংগীতের সব উপকরণের মধ্যে গিটার ছিল গ্রাসিয়েলার সবচেয়ে প্রিয়। তবে মার্টিন সে সময় নিজের কাজকর্ম নিয়ে এতটাই ব্যস্ত ছিলেন যে প্রিয়তমা স্ত্রীকে বলেছিলেন, 'এ ব্যাপারে আমরা পরে কথা বলব।'
হঠাৎ মারা যাওয়ার সময় গ্রাসিয়েলার পেটে তাঁদের পঞ্চম সন্তান। শোকে কাতর মার্টিন একদিন ঠিক করলেন, স্ত্রীর শেষ ইচ্ছা পূরণ করবেন। অনেককে ডেকে গিটারের মতো দেখতে বাগান করার পরিকল্পনার কথা জানালে কেউ তেমন সাড়া দেয়নি। অবশেষে তিনি নিজেই ওই খামারে গিটারের আয়তনের নকশা করে সাইপ্রাস ও ইউক্যালিপটাসগাছ লাগাতে শুরু করেন। ১৯৭৭ সাল থেকে বাগানে গাছ লাগানো শুরু করেন তিনি। প্রথমে তাঁর সন্তানদের দাঁড় করিয়ে গিটারের মাপ ঠিক করতেন। ধীরে ধীরে পুরো গিটারের পরিমাপে গাছ লাগানো হয়। এরপর গাছ বড় হওয়ার পালা। মার্টিন দেখতেন, তাঁর চার সন্তান আর গাছগুলো সঠিকভাবেই বেড়ে উঠছে। এই সাত হাজার গাছ ঠিকমতো লালন-পালন করতে মার্টিনকে অবশ্য বেশ বেগ পেতে হয়েছে। গবাদি পশুর আক্রমণ থেকে বাঁচাতে ছোট অবস্থায় প্রায় সব গাছকেই বেড়া দিয়ে আটকে দিতে হয়েছে। ডিজাইনের বাইরে গেলে নতুন করে গাছ লাগাতে হয়েছে।
স্ত্রীর সম্মানার্থে এ কাজ করে ৭০ বছর বয়সী কৃষক পেড্রো মার্টিন এখন বেশ আত্মতৃপ্ত। পর্যটন এলাকা হিসেবেও ওই অঞ্চলের নাম ছড়িয়ে পড়েছে। ১৯৯০ সালে মার্টিনের জীবনে নতুন সঙ্গিনীর আবির্ভাব হলেও তাঁকে বিয়ে করেননি তিনি। প্রেমিকা মারিয়া অবশ্য প্রেমিকের স্ত্রীভক্তি দেখে বেজায় খুশি_'সত্যিকারের ভালোবাসার জন্যই মার্টিন এমন বিশাল নিদর্শন প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছেন।' মার্টিনের পরলোকগত স্ত্রীর স্বপ্নের গিটারের বাগান হয়েছে ঠিকই, কিন্তু দুজনের কেউই ওপর থেকে দেখেননি তা। গ্রাসিয়েলা তো স্বর্গে গেছেন আগেই, আর মার্টিন বেঁচে থাকলেও উড়োজাহাজে করে আকাশ থেকে এই গিটারবাগান দেখেননি। কারণ তাঁর উচ্চতাভীতি প্রবল! (SAKIB NETWORK)
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন